ব্যাংক খাতে ব্যবস্থা নিতে ওপরের দিকে তাকালে চলবে না

আইএমএফ যেসব শর্তের কথা বলছে, তা দেশের জন্য ভালো; দেশের মানুষের জন্যও ভালো। ডলার–সংকটের কারণেই আইএমএফের কাছে যেতে হয়েছে। যদি রপ্তানি আয় সময়মতো দেশে আসত এবং প্রবাসীরা স্বচ্ছন্দে আয় পাঠাতে পারতেন, তাহলে এই সংকট হতো না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার থাকলে রপ্তানি আয় সময়মতো দেশে চলে আসত। সংকট মোকাবিলায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে সংকট কমে যাবে।

ব্যাংক খাতের সুদহার তুলে দিতে বলেছে। এভাবে ৬/৯ বা ৭/১১ সুদহার কোথাও নেই। আমরা তখনই বলেছিলাম, এটা দেশের জন্য ভালো হবে না। এতে কি দেশের আর্থিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে? বিনিয়োগ কি বেড়েছে? তা সরকারই ভালো বলতে পারবে। যেটা হয়েছে, তা হলো—আমানতকারীরা যা পাচ্ছেন, তা মূল্যস্ফীতির কম। এ জন্য এটা যত দ্রুত সম্ভব তুলে দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রভাবশালী গ্রুপের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। আন্তর্জাতিক ভালো ব্যবস্থাগুলো বাংলাদেশেও প্রয়োগ করতে হবে। না হলে পুরো খাতের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়বে।

এখন পুরো খাতে তারল্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এটাই এখন প্রধান সমস্যা। প্রভাবশালী গ্রুপের চাপে ঋণ পরিশোধে নানা ছাড় ও কিছু ব্যাংকে বড় অনিয়ম হওয়ার পরেও যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষের ব্যাংক খাতের ওপর আস্থা কমে যাচ্ছে। আবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যারা অনিয়ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অবসায়ন করার উদ্যোগ ঠিক ছিল না। এতে মানুষ আরও আতঙ্কিত হয়েছে।

এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। যে ক্ষমতা আছে, তা প্রয়োগ করে পুরো খাতের উন্নতিতে কাজ করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওপরের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। তাহলেই আইএমএফের শর্তগুলো সহজে পূরণ করা যাবে। দেশের জন্য এই ঋণ খুব প্রয়োজন ছিল। এতে চাহিদা পূরণের চেয়ে আস্থা বেড়েছে বেশি।

Source: প্রথমআলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *